রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারির প্রতিবেদন অনুসারে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে মাত্র ১০৬টি বেঙ্গল টাইগার ছিল। পরে, ২০১৭-২০১৮ বাঘশুমারিতে সেখানে ১১৪টি বাঘ শনাক্ত করা হয়।
বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০০১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৪৮টি বাঘ মারা গেছে। এর মধ্যে ২২টি সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগে এবং ১৬টি পশ্চিম বিভাগে মারা যায়। এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১০টি বাঘের চামড়া উদ্ধার করে।
প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরী বলেছেন, ‘বাঘ সংরক্ষণ’ নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে যা আগামী মাসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তিন বছরের এ প্রকল্পে ব্যয় ৪৮ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি যদি অনুমোদিত হয়, তাহলে ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে কার্যক্রম শুরু করা হবে।
ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, হাজার হাজার মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল।
বাঘের জনসংখ্যা সংরক্ষণে সকলকে সম্পৃক্ত করা উচিত এবং রাজনৈতিক লোকদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
ওয়াইল্ডটিম সুন্দরবন-সংলগ্ন অঞ্চলে একটি বাঘ সংবেদনশীল গ্রাম প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং তারা ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার তিনটি গ্রামে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, যোগ করেন তিনি ।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবনে বাঘ শিকারিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি স্মার্ট টহল করা হচ্ছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের ডিএফও বশিরুল আল মামুন বলেছেন, তারা মূল শিকারিদের প্রবেশের জায়গাটিকে বিশেষ নজরদারির মধ্যে রেখেছেন।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাঘশুমারি প্রকল্প ২০১৫ সালে শুমারি পরিচালনা করেছে। এতে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবন থেকে ধারণ করা বাঘের ১৫,০০ চিত্র ও পায়ের ছাপ পরীক্ষা করা হয় এবং দেখা যায় বাঘের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে কম।
সরকারের ২০০৪ সালে পরিচালিত বাঘশুমারি অনুসারে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশটি ৪৪০টি বাঘের আবাস ছিল।
সেন্ট পিটার্সবার্গের বাঘ শীর্ষ সম্মেলন হতে ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস পালন করা হচ্ছে।